সাদা বলের ক্রিকেট থেকে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক, নিজের ক্যারিশমায় বুমরাহ ভেঙেছেন বাঁধাধরা গন্ডি

।। প্রথম কলকাতা ।।
কিংবদন্তি কপিল দেবের পরে ভারতের দ্বিতীয় ফাস্ট বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে দেশকে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন জসপ্রীত বুমরাহ। মাত্র ৪ বছর আগে তার টেস্ট অভিষেক হওয়ার পর, বুমরাহ অবিশ্বাস্য গতিতে নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অন্য মাত্রায়। আসলে, বুমরাহ প্রতিনিধিত্বমূলক ক্রিকেটের কোনও স্তরে কোনও দলের নেতৃত্ব দেননি। তবে তিনি আজ শুক্রবার দেশের ৩৬তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন।
বুমরাহ আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে তার নিজস্ব বোলিং অ্যাকশন দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন। একজন ‘সাধারণ ফাস্ট বোলার’ থেকে তিনি একটু ভিন্ন। বুমরাহ অন্যান্য পেস বোলারদের মতো বেশি দূরত্বে দৌড়ান না বা ডেলিভারির আগে ক্রিজে বড় লাফ দেননা। কিন্তু গুজরাটের এই পেসার তার নিজস্ব অনবদ্য স্টাইলে সাফল্য পেয়েছেন। বুমরাহ এই ধারণাটিকে ঘৃণা করেন যে আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেট দলে তার নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করেছে। তিনি এটাকে ‘মিথ’ বলেছেন। আসলে, আহমেদাবাদের বোলার তার আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম ৩ বছরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে মাত্র ১৭টি ম্যাচ খেলেছিলেন।
প্রতিটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ক্রিকেটারের মতো, বুমরাহও লাল বলের ক্রিকেট পছন্দ করতেন। কিন্তু সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তার সাফল্য, বিশেষ করে তার অবিশ্বাস্য রকমের ভিন্ন বোলিং অ্যাকশনের কারণে বাঁধাধরা ছককে ভেঙেছেন তিনি। ২০১৮ সালে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অভিষেক হয় বুমরাহর। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতের এই স্পিড স্টারকে। রবি শাস্ত্রীর সেই একটি সিদ্ধান্তে ভারতের সর্ব-ফরম্যাটের অন্যতম সেরা বোলার হয়ে ওঠেন বুমরাহ।
টেস্ট ক্রিকেটে ৪ বছরের কেরিয়ারে ২৯টি ম্যাচে, ২১.৭৩ গড়ে আটবার ৫ উইকেট শিকার সহ ১২৩ উইকেট নিয়েছেন। সেই সঙ্গে বুমরাহ হয়ে উঠেছেন একজন ভালো লাল বলের বোলার। চলতি বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট খেলেন বুমরাহ। এরপরই পুনঃনির্ধারিত টেস্ট খেলতে ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন ভারতের এই স্পিডস্টার। সেখানেই আসে বড় সুযোগ। অধিনায়ক রোহিত শর্মা কোভিড আক্রান্ত হলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টেস্টের জন্য ভারতীয় দলের অধিনাকত্বের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয় তার হাতে।
টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের অধিনায়ক হওয়ার অনুভূতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে বুমরাহ তার আনন্দ লুকাতে পারেননি। বার্মিংহাম টেস্টের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “এটি একটি বড় অর্জন, একটি বড় সম্মান। আমার কাছে টেস্ট ম্যাচ খেলা স্বপ্ন ছিল এবং এমন সুযোগ পাওয়া সম্ভবত আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর একটি। আমি খুব খুশি যে আমাকে এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।”