‘কেকের অনুষ্ঠানের এত টাকা কোথা থেকে এল?হাওয়া থেকে তো নয়’,সৌগতর প্রশ্নে অস্বস্তিতে তৃণমূল

।। প্রথম কলকাতা ।।
গত ৩১ সে মে কলকাতার নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠানে গান গাইতে এসেছিলেন ভারত খ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে। যে অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অনুষ্ঠান শেষে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। হোটেল থেকে থেকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। সংগীতশিল্পীর অকস্মাৎ মৃত্যুর পর অনুষ্ঠান পরিচালনা নিয়ে যেমন প্রশ্ন ওঠে, তেমনি প্রশ্ন উঠে কলেজ ফেস্টের জন্য এই বিপুল টাকা কোথা থেকে এসেছে? এই প্রশ্ন বারবার করেছেন বিরোধীরা। আর এবার সেই প্রশ্নই করতে দেখা গেল তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে। বরানগরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সৌগত রায় প্রশ্ন করলেন, এত টাকা আসে কোথা থেকে? ত্রিশ, পঞ্চাশ লক্ষ টাকা কে দিয়েছে? হাওয়া থেকে তো আসে না।
বরানগরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি সাংগঠনিক কর্মসূচিতে যোগদান করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সেখানেই গুরুদাস কলেজের ফেস্ট নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলতে দেখা গেছে তাঁকে। তাঁকে বলতে শোনা গেল, “এই যে কেকে গান গাইতে এসে মারা গেলেন। আমি শুধু ভাবি যে, এত টাকা কোথা থেকে এল! ৩০ লাখ না ৫০ লাখ কত যেন লেগেছে শুনলাম! টাকা তো হাওয়া থেকে আসে না।”
মুম্বাই থেকে শিল্পী আনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁর বক্তব্য, “এই রকম প্রচণ্ড খরচ করে বম্বে থেকে শিল্পী আনার কি খুব দরকার ছিল? এত টাকা দিয়ে এ সব করতে গেলে কারও না কারও কাছে সারেন্ডার করতে হয়। এলাকার মস্তান নয় তো প্রোমোটারের কাছে। প্রথমেই যদি সারেন্ডার করো, তা হলে বাকি জীবন লড়াই করবে কী করে?”
অনুষ্ঠান পরিচালনা নিয়ে নিজের পূর্ব অভিজ্ঞতার কথাও বললেন সৌগত রায়। যেখানে তিনি বলেন, “আমরা বরাহনগর মেলা করতাম। সেই মেলার জন্য বাইরে থেকে শিল্পী আনা হত। পরে অপর্ণা আমায় বলল, দাদা যা খরচ দাঁড়াচ্ছে তাতে ভদ্র ভাবে, ভালো ভাবে টাকা জোগাড় করা মুশকিল। তাই বরাহনগর উৎসব বন্ধ করে দিলাম।”
সৌগত রায়ের বক্তব্যে স্বভাবতই অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। এতদিন যে প্রশ্ন করেছেন বিরোধীরা, সে প্রশ্ন এবার করতে দেখা যাচ্ছে দলের প্রবীণ সাংসদকে। সৌগত রায়ের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, “শিক্ষিত মানুষ তো। সবটা বুঝতে পারছেন। এমন মন্তব্য করে বিপদে পড়ছেন নিজের দলেই। এই তো চলছে রাজ্যে। শুধু নাচ,গান, ফূর্তি। শিক্ষা নেই, চাকরি নেই।”
এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানান, “তিনি যে রাজনৈতিক দলের সাংসদ সেই রাজনৈতিক দল গ্রামগঞ্জে সব জায়গায় এই ধরনের টাকা দিয়ে অনুষ্ঠান করছে। টাকাটা কোথা থেকে আসছে? আজকে
কেকের ২৫ লক্ষ, ২৬ লক্ষ টাকা নিয়ে উনি প্রশ্ন তুলেছেন। এটা তো পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপী।”
আবার, এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “সৌগতবাবু যা বলেছেন একদম ঠিক কথা। কেকের মৃত্যুর পর এই কথাটাই বলেছিলাম। কলেজের ইউনিয়ন বলে তো কিছু নেই। তাহলে ইউনিয়নের নামে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা কলেজ কর্তৃপক্ষ কী করে করল? এটা কি অনুপ্রেরণা? না কি এটা কলেজকে সামনে রেখে তোলাবাজি, না কি এটা বাইরের তোলাবাজ, তাঁদের কাছে সারেন্ডার করা? আজকে সৌগতবাবু বলাতে ভাল লাগছে।”
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, ” যারা কলেজে পড়েছেন তাঁরা জানেন এধরনের অনুষ্ঠান করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ভরতির সময়ই একটা টাকা নেওয়া হয়। আর গত ২-৩ বছর অনুষ্ঠান হয়নি। ফলে কলেজের ফান্ডে টাকা ছিল। সেই টাকা দিয়েই অনুষ্ঠান হয়েছে। এনিয়ে অযথা বিতর্ক করে লাভ নেই।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম