আকাশছোঁয়া সাফল্য, দেবী শেঠির সম্পত্তির পরিমাণ জানলে চমকে যাবেন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী চিকিৎসকদের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গের বুকে মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল খুলছেন তিনি। জানেন জনপ্রিয় চিকিৎসক দেবী শেঠির সম্পত্তির পরিমাণ কত?
উত্তরটা জানলে বনবন করে ঘুরবে মাথা!
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে কথা দিয়েছিলেন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠি। এবার সেই কথার যেন বাস্তাবায়ন হতে চলেছে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দেওয়া জমিতে শীঘ্রই হাসপাতাল খুলতে চলেছেন দেবী শেঠি। নিউটাউনে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে দেশের বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তুলতে চান বলে জানিয়েছিলেন। বাংলায় মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি করতে চান চিকিৎসক দেবী শেঠি। ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে হাসপাতালের শিলান্যাস। যদিও আজকের এই ভিডিওতে আমরা হাসপাতাল সম্পর্কে কথা বলবো না, বরং কথা বলবো জনপ্রিয় এই চিকিৎসকের সম্পত্তি সম্পর্কে।
বর্তমানে দেবী শেঠির নাম জানেন না এমন লোকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। হৃদয় কাঁটা ছেড়া করেও জয় করেছেন লাখ লাখ হৃদয়। ভারতের শীর্ষ স্থানীয় চিকিৎসকের মধ্য়ে ডা. দেবী শেঠি অত্য়ন্ত সুপরিচিত কার্ডিয়াক সার্জন। আর এহেন চিকিৎসক যে কোটিপতি হবেন তা নতুন করে বলে দিতে হবে না। কোটিপতি বললে ভুল হবে বরং তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ পাহাড় প্রমাণ বললেও অত্যুক্তি হয় না।
১৯৮৪ সালে হদরোগে আক্রান্ত হন মাদার টেরেসা। সে সময় তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন দেবী শেঠি। মাদার টেরেসার জীবনের শেষ পাঁচ বছর তিনিই ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলে তাঁর।
১৯৮২ সালে কস্তুরবা মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারিতে গ্র্য়াজুয়েশন পাশ করেন দেবী শেঠি। পরে ইংল্যান্ড থেকে সার্জারির বিষয়ে লাভ করেন উচ্চতর ডিগ্রি। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কার্ডিয়াক সার্জন হিসেবে প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন করেন দীর্ঘদিন। সেখানে থেকে বহু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন জনপ্রিয় এই চিকিৎসক।
১৯৮৯ সালে লন্ডনের উচ্চাভিলাষী চাকরির অফার পেয়েও ফিরে আসেন ভারতে। ডা. রায়ের সঙ্গে তিনি কলকাতায় গড়ে তোলেন ভারতের প্রথম হৃদরোগ চিকিৎসা হাসপাতাল বিএম বিড়লা হার্ট রিসার্চ সেন্টার। তবে ভারতীয়দের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ইউরোপিয়ানদের তুলনায় তিনগুণ বেশি হওয়ায় এই একটি হাসপাতাল যথেষ্ট ছিল না। এর জন্য ডা. দেবী শেঠি ও ডা. রায় মিলে গড়ে তোলেন আরও তিনটি হৃদরোগ চিকিৎসাকেন্দ্র। বিএম বিড়লা হার্ট সেন্টার যাত্রার শুরুর অল্প দিনের মধ্যেই ভারতের শ্রেষ্ট হার্ট হাসপাতালে একটিতে পরিণত হয়।
২০০১ সালে তিনি নারায়ণ হৃদয়ালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যা পরবর্তীতে পরিণত হয় নারায়ণা হেলথ-এ। ৪৭টি মেডিক্যাল পরিষেবা রয়েছে এখানে। ১৫,০০০ কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন সহ ভারতের বৃহত্তম হাসপাতাল নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে একটি।
ব্যাঙ্গালুরুতেও প্রতিষ্ঠান করেছেন মণিপাল হার্ট ফাউন্ডেশন। নারায়না হেলথের ৩০টির বেশি শাখা হাসপাতাল রয়েছে ভারত জুড়ে। ৭০০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, সাধ্যের মতো চিকিৎসা খরচ, চমৎকার স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য সকলের প্রশংসা জিতে নিয়েছে। ২০১৫ সালে আইপিও লঞ্চ করেছেন দেবী শেঠি। ভারতের অন্যতম ধনী মহিলা কিরণ মজুমদার শ-এরও তাঁর ব্যবসায় স্টক রয়েছে।
ডঃ শেঠি ভারতে প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার, পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণ -সহ অসংখ্য সম্মান পেয়েছেন। টাইম ম্যাগাজিনে স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে ৫০ জনের তালিকায় নাম তুলে নিয়েছেন তিনি। দেবী শেঠি ভারতের ধনীতম চিকিৎসকগের মধ্যে একজন। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।