ম্যারাথন অপারেশন করে নজির গড়লেন ১৫ জন চিকিৎসক। ঘটনাস্থল, এসএসকেএম। গত ৫ দিনে এখানে মোট ১৮৫ জন রোগীর বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা। সব কটি অপারেশনই সফল হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর দাবি, যা রাজ্যের বুকে তো বটেই, দেশের ইতিহাসেও নজিরবিহীন।
হঠাৎ এমন উদ্যোগের কারণ কী? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর দাবি, নানা কারণে অস্ত্রোপচারের রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। এদিকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক রোগীর চেয়ে বেশি সংখ্যক রোগীর অস্ত্রোপচার করাও সম্ভব নয়। তাই চাপ কমাতে চিকিৎসকরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা সকলে একসঙ্গে একাধিক অপারেশন করবেন।
এজন্য হাসপাতালের নিয়মিত অপারেশনের পাশাপাশি অস্থায়ীভাবেও অপারেশন থিয়েটার তৈরি করা হয়। এর পর গত ৫ দিন ধরে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অপারেশন শুরু করেন চিকিৎসকরা। জানা যাচ্ছে, ৫ দিনে মোট ২০০টি রোগীর অস্ত্রোপচারের টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ১৮৫ রোগীর সফলভাবে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ বছর বয়সী নাবালক যেমন ছিল তেমনই ছিলেন ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধও।
সরকারি হাসপাতালের এমন উদ্যোগে খুশি রোগী ও তাদের পরিজনেরা। তাঁদের কথায়, হাসপাতালের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। যাঁরা বলেন সরকারি হাসপাতালে নাকি চিকিৎসা হয় না, তাঁদের বলব এসএসকেএম হাসপাতালে এসে দেখে যান, সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা কাকে বলে।
সরকারি হাসপাতালের এই সাফল্যে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রীও। সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো, চিকিৎসার মান নিয়েও রাজ্য নজির গড়েছে, সেই কথা উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে লেখেন, “আমাদের নিজেদের সুপার স্পেশ্যালিটি সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম এক নতুন রেকর্ড গড়েছে। গত ৫ দিনে অপেক্ষমাণ ১৮৫টি গলব্লাডার অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।”
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “এটি ছিল একটি বিশেষ উদ্যোগ, যার মাধ্যমে অপেক্ষমাণ গলব্লাডার রোগীদের অস্ত্রোপচার দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে এবং একইসঙ্গে প্রমাণিত হয়েছে যে, যদি আমাদের চিকিৎসকরা একসঙ্গে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে সত্যি অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অর্থাৎ এই ৫ দিনে আরও ৩৯০টি বড় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, যা এই বিশেষ উদ্যোগের বাইরে।”
উল্লেখ্য, সরকারি হাসপাতালের কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বেড না-পাওয়ার অভিযোগ। কেউ আবার চিকিৎসা করানোর জন্য অপেক্ষায় থাকেন প্রায় এক বছর। এই অবস্থায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিশ্বরেকর্ড গড়ল এসএসকেএম হাসাপাতাল। ছুটি বাতিল করে প্রায় ২০ টি বিভাগের চিকিৎসকরা হাতে হাত মিলিয়ে করে ফেললেন ১৮৫ টি গলব্লাডার অপারেশন। যা নিয়ে এখন চর্চা চলছে সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্রই।