মহা শিবরাত্রি ব্রত পালন করবেন? কেবলমাত্র শিবের মাথায় জল ঢাললে চলবে না কিন্তু মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম!
জানেন বিশেষ এই দিন কী করবেন আর কী করবেন না? কীভাবে খুশি করবেন ভোলে বাবাকে?
মহাশিবরাত্রি হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব, যা ফাল্গুন মাসে পালিত হয়। মহাশিবরাত্রিকে ভগবান শিবের উপাসনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পার্বণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশ তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। চতুর্দশী তিথি ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত এবং এই দিনে ভগবান শিবের রুদ্রাভিষেক করা হয়। তাই যারা মহাশিবরাত্রির দিনে ভগবান শিবের পুজো করেন, ভগবান ভোলেনাথ তাদের বিশেষ আশীর্বাদ করেন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ২৬ তারিখ অর্থাৎ বুধবার মহা ধুমধামে পালিত হতে চলেছে মহা শিবরাত্রি। আপনি করেন নাকি এই ব্রত? জানেন বিশেষ এই দিন কোন কাজ করা উচিত আর কোন কাজ করা উচিত নয়? না জানলে এখনই জেনে নিন।
মহাশিবরাত্রিতে কী করবেন?
মহাশিবরাত্রির ব্রত পালন করলে একদিন আগেই উপবাসের সংকল্প নিন। মহাশিবরাত্রির আগের দিন সকালে স্নান সেরে শিব পুজোর সময় উপবাসের সংকল্প নিন। হাতে সামান্য চাল ও জল নিয়ে এই সংকল্প গ্রহণ করতে হয়। মহাশিবরাত্রিতে ব্রাহ্মমুহূর্তেই বিছানা ছাড়ুন। সূর্যোদয়ের আগেই সেই দিন ঘুম থেকে উঠে পড়া জরুরি। উপবাসের দিন ভোরবেলা স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরুন। সাদা রঙের কাপড় পরা সবচেয়ে শুভ। মহাশিবরাত্রিতে সারাদিনে যতবার সম্ভব ‘ওম নমঃ শিবায়’ জপ করুন। যেহেতু শিবরাত্রির পুজো রাত্রিবেলা করা হয়, তাই সন্ধেবেলা পুজোয় বসার আগে আর একবার স্নান করে নিন।পরের দিন সকালে স্নান সেরে তবেই উপবাস ভঙ্গ করবেন।
মহাশিবরাত্রির উপবাস বেশ কঠিন। তাই যাঁদের কোনও অসুখ আছে বা শরীর খুব একটা ভালো নেই, তাঁরা মহাশিবরাত্রির ব্রত পালনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিন। শিবলিঙ্গে দুধ, ধুতরো ফুল, বেলপাতা, চন্দন লেপা, দই, মধু, ঘি ও চিনি নিবেদন করুন। দৃকপঞ্জিকা অনুসারে পরের দিন সূর্যোদয়ের পরে এবং চতুর্দশী তিথি অবসানের মাঝামাঝি কোনও সময়ে উপবাস ভঙ্গ করতে পারেন। মহাশিবরাত্রিতে কী করবেন না?
মহাশিবরাত্রিতে আপনি যদি উপবাস না রাখেন, তাহলেও চাল, গম বা ডাল জাতীয় কোনও খাবার এই দিন খাবেন না।
কোনও আমিষ খাবার মহাশিবরাত্রিতে ভুলেও খাবেন না। পেঁয়াজ রসুন থেকেও এ দিন দূরে থাকুন। শিবলিঙ্গে নারকেলের জল নিবেদন করবেন না। এবার জেনে নিন মহাশিবরাত্রির দিন ভুল করেও ভোলে বাবাকে নিবেদন করা চলবে না কোন কোন জিনিস।
তুলসী পাতা
হিন্দুধর্মে তুলসী পাতার এক আলাদাই গুরুত্ব রয়েছে। তুলসী পাতা ছাড়া পুজোই হয় না কোনো দেব-দেবীর। তবে মহাদেবের ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপারটা আলাদা। পুরাণ মতে, তুলসীর স্বামী জলন্ধরকে বধ করেছিলেন মহাদেব। সে কারণেই মহাশিবরাত্রিতে ভুল করেও শিবলিঙ্গে তুলসী পাতা নিবেদন করবেন না।
নারকেল
মহা শিবরাত্রির দিন শিবলিঙ্গে নারকেল বা নারকেলের জল করবেন না নিবেদন। মনে রাখবেন, এই ফলকে বলা হয় শ্রীফল। প্রচলিত বিশ্বাস, নারকেলে স্বয়ং মা লক্ষ্মীর বাস। তাই মহাদেবকে কখনোই নারকেল নিবেদন করবেন না।
ভাঙা চাল
মহাশিবরাত্রির দিন ভুল করেও মহাদেবকে দেবেন না ভাঙা চাল। এই কাজ করলে বিপদে পড়বেন আপনি।
কুমকুম
কুমকুম হল মহিলাদের শৃঙ্গারের উপকরণ। আর সে কারণেই পৌরুষের প্রতীক মহাদেবকে কুমকুম নিবেদন করবেন না।
হলুদ
যে কোনো শুভ কাজে হলুদের ব্যবহার করা হয়। কারণ হলুদ হল শুদ্ধতার প্রতীক। কিন্তু তা বলে মহাশিবরাত্রির দিন শিবলিঙ্গে হলুদ নিবেদন করবেন না।